খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় - নিম পাতার ৫টি ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানুন
নিম পাতা খুব উপকারী এবং ঔষধি গুনসম্পন্ন পাতা।তাই খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে
কি হয় তা জানানো হবে।এই নিম পাতা বেটে সকালে খালি পেটে খেলে অনেক ধরনের উপকার
পাওয়া যায়।তাই এটি একটি ঔষধি গুণসম্পূর্ণ পাতা।কিন্তু এটি ঔষধি গুন সম্পূর্ণ
পাতা তাই তেতো হলেও খেতে হবে।আবার নিম পাতার ক্ষতিকর দিক এগুলোও জানানো হবে।
নিম পাতা এতটা ঔষধি গুণসম্পন্ন পাতা এই পাতা খেলে শরীরের অনেক ধরনের উপকার পাওয়া
যায়।নিম পাতার রস তেতো হওয়াই অনেকে খেতে পারে না।তবে যেই করেই হোক নিমপাতা খেতে
হবে তাহলে আপনারা উপকার পাবেন।
পোস্টসূচিপত্রঃ খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় - নিম পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানুন
খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
নিমপাতা মানব দেহের জন্য একটি উপকারী পাতা।তাই আপনারা যদি নিয়ম করে খেতে পারেন
তবে অনেক ধরনের উপকার পেতে পারেন।আবার এটিকে আপনারা যদি অনেক বেশি বা অতিরিক্ত
পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তবে এর ক্ষতিকর দিক আছে।তাই আপনাদের অবশ্যই নিয়ম-কানুন মেনে
অল্প পরিসরে নিম পাতার রস খেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা কি
এটি আপনাদের ভাল করে জানিয়ে দেওয়া হলো যে নিম পাতার রস অল্প পরিসরে খেলে দেহের
অনেক রোগ ভালো করতে সাহায্য করে।তাই নিমপাতা খাওয়াটা মানব দেহের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ।কিন্তু তা নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না।খালি
পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় তা নিচে দেওয়া হলো:
- রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
- রক্তের নালী পরিষ্কার করে দিয়ে রক্ত চলাচল ভালো হয়।
- সকালে খালি পেটে কচি নিমপাতা খেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা দূর হয়।
- সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন নিমপাতার রস খেলে পেটের কৃমি দূর হয়।
- আবার নিমপাতা বেটে মুখে ব্যবহার করলেও নানান রকম ব্যাকটেরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
খালি পেটে নিম পাতা খাওয়ার যেমন উপকার আছে তেমন বেশি দিন ধরে খালি পেটে নিম
পাতার ক্ষতিকর দিক ওআছে।নিম পাতা প্রতিদিন খাওয়ার ফলে কারো যদি বমি বমি ভাব বা
ড়ায়রিয়া হয় তৎক্ষণাৎ নিম পাতা খাওয়া বন্ধ করতে হবে।নিম পাতার রস অনেকদিন ধরে
খেলে বন্ধ্যাত্বা সৃষ্টি হতে পারে।
যাদের নিম্ন রক্তচাপ আছে তারা নিম পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।আবার গর্ভবতী
মেয়েরা নিম পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।খালি পেটে নিমপাতার রস খেলে অনেক উপকার আছে আবার বেশি খেলে এর ক্ষতিও আছে।তাই
পরিমাণ মতো নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে।নিম পাতার আরো কিছু ক্ষতিকর দিক নিচে দেওয়া
হলো:
- খালি পেটে অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে উপকারের বদলে ক্ষতি হতে পারে।
- অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়ার পর বমি বমি ভাব হতে পারে।
- কারো আবার ডায়রিয়া হতে পারে।
- প্রচন্ড মাথা ব্যথা করতে পারে।
- তাই দীর্ঘদিন যাবত নিম পাতার রস বা নিমপাতা কোন ভাবে খাওয়া যাবে না।
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিম পাতা খাওয়া যেমন শরীরের পক্ষে উপকারিতা।নিমপাতা মানব দেহের জন্য অনেকটা
উপকার সাধন করে থাকে আবার অন্যদিকে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি করে থাকে।তাই
নিয়ম-কানুন মেনে নিমপাতা খেতে হবে এবং ব্যবহার করতে হবে।নিচে নিম পাতার উপকারিতা
ও অপকারিতা দেওয়া হলো:
উপকারিতা:নিমপাতা মানবদেহের জন্য খুব উপকার করে থাকে।নিম পাতার মাধ্যমে
পোকামাকড় তাড়ানো হয় এবং মানব দেহের উপকার হয়।নিম পাতা ব্যবহার করে চুলকানি
থেকে রেহাই পাওয়া যায়।নিম পাতা ব্যবহার করে চুলকে করে আরও শক্তিশালী ও
মজবুত।তাই মানবদেহের অনেক উপকার করে থাকে এই নিমপাতা।
অপকারিতা:অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়ার ফলে শরীরে অনেক ধরনের প্রভাব ফেলতে
পারে।তাই আপনাদের সাবধান থাকতে হবে।যেনো পরিমাণের বাইরে যেয়ে নিমপাতা না খাওয়াই
উচিত।অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে বমি বমি ভাব বা ডায়রিয়া হতে পারে।তাই অতিরিক্ত নিম পাতা
খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।নিম পাতা খেলে কি কি অপকারিতা হয় তা নিচে দেওয়া
হলো:
- অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে কিডনির ক্ষতি হয়।
- অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে লিভারের সমস্যা হয় প্রচুর।
- অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়ার ফলে গর্ভপাত হতে পারে।
- অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়ার ফলে এলার্জি প্রতিক্রিয়া বাড়তে পারে।
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
আমাদের দেশে প্রায় মানুষেরই চুলকানি হয়ে থাকে।কিন্তু তারা কোনভাবেই জানে না যে
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার কতটা গুরুত্বপূর্ণ।চুলকানি বা শরীরে ছোট ছোট চুলকানি
হলে নিমপাতা পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে কতটা পরিমাণ উপকার
পাওয়া যায় তা অনেকেই জানে না।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা
আপনাদের যদি শরীর এখনো কোনো ভাবে চুলকানি হয় তবে এই নিমের পাতা ফুটিয়ে নিয়ে
গোসল করলে আরেকটা উপকার পাবেন।এই নিম পাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করে
তারপর গোসল করলে দেখবেন যে চুলকানি ও ভালো হয়ে যাবে এবং মাথায় থাকা খুশকি ও
ভালো হয়ে যাবে।এই নিম পাতা মানব দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।চুলকানিতে
নিমপাতার আরো কিছু ব্যবহার নিচে দেওয়া হলো:
- শরীরের কোথাও চুলকানি বের হলে নিমপাতা বেটে লাগিয়ে দেবেন।
- নিম পাতাতে তেতো টাইপের উপাদান থাকার কারণে চুলকানির যত ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া সব দূর করে দেয়।
- আবার ঘা পচাড়ি চুলকানি এইসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে নিম পাতার রস খেতে হবে নাহলে নিমপাতা পেটে লাগিয়ে দিতে হবে।
- যেসব জায়গা গুলোতে চুলকানি বের হবে সেসব জায়গায় আগে ভালো করে চুলকিয়ে নেবেন তারপরে নিম পাতা বেটে লাগিয়ে দিবেন ভালো উপকার পাবেন।
নিম পাতা মুখে দিলে কি হয়
নিম পাতা হচ্ছে একটি বিশেষ ঔষধি পাতা।তাই নিম পাতা মুখে দিলে কি হয় সেটা আপনাদের
জানতে হবে।কারণ নিম পাতা খাওয়া যায় আবার নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চাও করা
যায়।আপনারা যদি নিম পাতা বেটে মাথায় এবং মুখে ভালোভাবে লাগাতে পারেন তাহলে
কিন্তু প্রচুর উপকার পাবেন কারণ নিম পাতা ত্বকের আর মাথার খুশকি দূর করতে খুব
কার্যকার।
নিম পাতা হচ্ছে একটি তেতো টাইপের পাতা তাই যেকোনো ভাইরাস জীবাণু দূর করতে সাহায্য
করে থাকে।মাথায় এবং ত্বকে ভাইরাসের কারণে বা বিভিন্ন ধুলা-ময়লা এসে মাথায় খুশকি
এবং ত্বক পুরোপুরি কালো করে দেয়।তখনই আপনারা যদি নিম পাতা আর অ্যালোভেরা একসঙ্গে
বেটে মাথায় এবং মুখে লাগাতে পারেন তাহলে সব রকমের উপকার পেয়ে যাবেন।
এই নিম পাতা বেটে প্রতিদিন গোসল করার আগে মাথায় এবং মুখে লাগিয়ে দিন।তারপরে ১০
থেকে ১৫ মিনিট পরে সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন দিয়ে গোসল
করে নিন।তাহলে দেখবেন যে আগের তুলনায় আপনার মাথার চুলের খুশকিও নেই এবং ত্বকও
আরো সুন্দর এবং উজ্জ্বল হয়ে গেছে।নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো:
- নিমপাতা মুখে দিলে ত্বকের ইনফেকশন দূর করে।
- নিমপাতা মুখে ব্যবহার করলে ব্রণ দূর করে।
- নিমপাতা মুখে ব্যবহার করলে শুষ্ক ত্বকের যত্ন হয়।
- নিমপাতা ব্যবহার করলে মুখে ব্রণ বের হয়ে যেই গর্তগুলো হয়ে যায় সেগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
- আবার চুলের সমস্যা দূর করে থাকে।
নিম পাতার বৈশিষ্ট্য
নিম পাতা বা নিম হচ্ছে ঔষধি গুনসম্পন্ন উপাদান তাই নিম পাতার বৈশিষ্ট্য নানারকম
জানতে হবে।নিম পাতা হচ্ছে একটি বিশেষ ঔষধি পাতা তাই এটি দিয়ে যেকোনো রকমের ঔষধি
কাজ করা হয়।নিমপাতা বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ছত্রাক দূর করতে সাহায্য করে
থাকে।আবার অন্যদিকে নিম গাছের ফল থেকে কিন্তু তেলও হয় এই তেল মানব দেহের জন্য
বিশেষ উপকারী।
এই তেল মানুষের শরীরে ব্যথা দূর করতে এবং নানান রকম ঘা পচাড়ি দূর করতে সাহায্য
করে থাকে।বর্তমান বিশ্বে এই নিমের তেল কোথাও পাওয়া যায় না এই তেল প্রায়
বিলুপ্ত হয়ে গেছে।নিমের পাতা দিয়ে নানা রকম অসুকের ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা
হয়।
কারো শরীরে যদি পক্স বা পচাড়ি হয় তাহলে নিমপাতা পানিতে গরম করে পুরো শরীর ধুয়ে
ফেললে তাহলে কিছু দিনের মধ্যেই তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়।নিচে কিছু নিম পাতার
নিরাময়ের উদাহরণ দেওয়া হলো:
- নিম পাতা ম্যালেরিয়া নিরাময়ের দূর করে।
- নিম পাতা জ্বর কমাতে সাহায্য করে।
- ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যা দূর করে।
- কীটপতঙ্গ বিনাশ করতে সাহায্য করে থাকে।
নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়
নিম পাতার রস বা নিম পাতার গুড়া আপনারা যেটাই খাবেন সেটাতেই প্রচুর পরিমাণে
রয়েছে উপকার। তাই আপনাদের নিয়ম করে খেতে হবে অল্প পরিসরে।এই নিম পাতার যতটা
পরিমাণে উপকার আছে এর আবার ততটা পরিমাণে ক্ষতিও আছে।এটা আপনাদের অবশ্যই জানতে হবে
এবং এর সাথে সাথে নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয় এটাও ভালোভাবে জানতে হবে।
তাই আপনাদের অবশ্যই নিয়ম-কানুন মেনে অল্প পরিসরে নিম পাতার গুড়া খাওয়া
উচিত।আশা করছি নিম পাতার রস ও গুড়া খাওয়া সব বিষয় সম্পর্কে আপনাদের ভালোভাবে
বোঝাতে পেরেছি।
তাই এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।নিম পাতার
গুড়া খেলে যেসব উপকার হয় তা নিচে দেওয়া হলো:
- নিম পাতার গুড়া খেলে ইমিউনিটি বাড়ে।
- নিমপাতার গুড়া খেলে শরীরে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
- নিম পাতার গুড়া খেলে প্রচুর পরিমাণে পেটের সমস্যা দূর করে।
- নিম পাতার গুড়া খেলে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে।
শেষ মন্তব্য | খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় - নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিম পাতার মানবদেহের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।কিন্তু এই পাতাকে অল্প পরিসরে এবং
নিয়ম মেনে খেতে হবে।খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে প্রচুর পরিমাণে উপকার পাওয়া
যায়।কিন্তু এই পাতা যদি আপনাো অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তবে অনেক রকমের
সমস্যা হতে পারে।
তাই আপনারা সাবধান থাকবেন এবং নিয়ম মেনে পরিমাণ মতো নিম পাতার রস ও গুড়া
খাবেন।এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার
করবেন এবং আরো খাবার বিষয়ক টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখুন এতক্ষন
আমাদের সাথে থাকার কারণে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
nafizplus.comনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url